1. admin@dailybarishalmukhopatro.com : admin-barishal :
  2. adminaminalamin@gmail.com : বরিশাল মুখপত্র : বরিশাল মুখপত্র
২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৪ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| শীতকাল| সোমবার| সকাল ৬:০০|
শিরোনামঃ
ময়মনসিংহ জেলা ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খাতুনে জান্নাত মা ফাতেমাতুজ জোহরা (আ.)-এর স্মরণে কনফারেন্স অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহে মাদকবিরোধী কাবাডি টুর্নামেন্ট ২০২৫ অনুষ্ঠিত বিভাগীয় পর্যায়ে আন্তঃকলেজ ফুটবলে ময়মনসিংহ জেলা সেরা আদালত প্রাঙ্গণে ‘সন্ত্রাসী মঞ্চ’: বিচারপ্রার্থীকে পিষে মারার হুমকি, আইনের শাসন নিয়ে চরম উদ্বেগ ভালুকায় দিপুকে পিটি য়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছে সরকার-শিক্ষা উপদেষ্টা দিপু চন্দ্র দাস’কে হত্যা ও আগুনে পোড়ানোর দায়ে অপরাধীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন ও রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান গফরগাঁওয়ে সিপিবির উদ্যোগে মহানবিজয় দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহে জেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

শাল্লার লাগোয়া কুশিয়ারা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের তান্ডব,নদীভাঙনের মুখে শত শত ঘরবাড়ি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৬৫ বার পড়েছেন

হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা লাগোয়া কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ভয়াবহ নদীভাঙনের মুখে রয়েছে এলাকার শত শত আধাপাকা ঘরবাড়ি। এর মূল কারণ হচ্ছে ফয়েজুল্লাহপুর ও মার্কুলি বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিনে-রাতে চলা পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগের তীর সরাসরি মার্কুলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির দিকে তাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদেই চলছে এই ‘বিটবালু লুটের মহোৎসব যা নদী তীরবর্তী গ্রামের বসতভিটা নদীভাঙনকে আরও জটিল করে তুলছে।

বর্ষার পর থেকেই শাল্লা থেকে আকিল-শা বাজার পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে নদীর পাড় ও বসতভিটা ভাঙতে শুরু করেছে। শত শত বসতভিটা ও ফসলি জমি বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা সত্বেও, ভাঙন কবলিত এলাকার মাত্র ১ কিলোমিটার দূরত্বে ফয়েজুল্লাহপুর ও মার্কুলি বাজারের ঠিক মাঝখানে দুটি বৃহৎ বিধংসী ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন মহোৎসব চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় মাকর্’লী বাজারের প্রভাবশালী মঈনউদ্দীন মেম্বারের যোগসাজশে একটি চক্র দিনে-রাতে এই ড্রেজারগুলো পরিচালনা করে দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকার বিটবালু উত্তোলন ও বিক্রি করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নদীগর্ভ থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় নদীর গভীরতা ও স্রোতের গতিপথ বদলে যাচ্ছে, যা নদীভাঙনকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে তুলছে।

অবৈধ বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা একে অপরের ওপর দায় চাাঁপানো চেষ্টা করছেন। প্রভাবশালী মঈনউদ্দীন মেম্বার তিনি এই অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে মোতাহার আলী জড়িত বলে জানান। তিনি বলেন, “বিগত দিনেও মোতাহার আলী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। আমি তাকে গভীর রাতেও ড্রেজার চালিত নৌকার সামনে দেখতে পাই।” তবে পরক্ষণেই তিনি প্রতিবেদককে ফোন করে সোহেল নামের আরেকজনকে এই চক্রের সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান।

অন্যদিকে মোতাহার আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে নিজে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “নদীতে ড্রেজার চলে এই বিষয়টা আমি থানাতেও জানাইছি। পূর্বে একসময় এই ড্রেজার ব্যবসা করেছিলাম, এই কারণে আমি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খেটে এসেছি। এখন নদীতে মঈনউদ্দীন মেম্বার, ফজল আর মিঠু প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতা থাকার কারণে তিনি শাল্লা থানায় বিচারপ্রার্থী হয়েছেন বলে জানান।

মোতাহার আলীর অভিযোগ, ৫/৬ জন পুলিশ এসে একবার ড্রেজারসহ অভিযুক্তদের হাতকড়া লাগিয়ে ও রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেন। তিনি মার্কুলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পাননি এবং একজন স্থানীয় সাংবাদিক ও এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে তিনি জানান।
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা জানান নদীতে অবৈধভবে বিধংসী ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিটবালু উত্তোলনের কন্দ্রবিন্দু হলো মার্কুলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। ড্রেজারগুলো ফাঁড়ি থেকে সামান্য দূরত্বে প্রকাশ্যে চললেও নৌ-পুলিশের রহস্যজনক নীরবতা স্থানীয়দের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “আমরা দিনের পর দিন বসতভিটা ও ফসলী জমি নদী ভাঙনের ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। আর মাত্র এক কি:মি দূরেই পুলিশ ফাঁড়ি থেকে চোখের সামনেই নদীটাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমরা নিশ্চিত, মার্কুলি নৌ-পুলিশের সঙ্গে এই লুটেরাদের সরাসরি বোঝাপড়া আছে। না হলে এতটা সাহস পায় কী করে?” নদীভাঙনের শিকার শত শত পরিবার ক্ষতির সম্মুখীন হলেও পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে জনমনে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে মার্কুলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক কাওসার গাজী বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমাদের জানা নাই আমি মাত্র কয়েকমাস হলো মাকুলী নৌ-পুলিশ ফাড়িঁতে যোগদান করেছি। তবে কেউ যদি আমাদের ইনফরমেশন দেয় অথবা লিখিতঅভিযোগ দেয় তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এই কাজের সাথে যে বা যারাই সম্পৃত্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।

পরিবেশবিদরা বলছেন, কুশিয়ারা হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী, যা জীববৈচিত্র ও কৃষির জন্য অপরিহার্য। এভাবে অবাধে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাদের মতে, এটি কেবল নদীভাঙন নয়, পুরো হাওর অঞ্চলের পরিবেশ,জীববৈচিত্র এবং জনজীবনের উপর দীর্ঘমেয়াদী বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

এ ব্যাপারে শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে রাতে আমরা পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযান আমরা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

অবৈধ বালু উত্তোলন এবং নদীভাঙন রোধে স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রæত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা প্রত্যাশা করছেন, মাঠ পর্যায়ে পুলিশ প্রশাসনের যোগসাজশের অভিযোগ তদন্ত করে উর্ধতন দ্রুত ব্যব¯নিবেন এবং অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিটবালু উত্তোলন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি ও জানান তারা ।

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2025 doiniksobarageamardesh.com